মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:১০ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি মাওলানা এমদাদুল হক:চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার প্রতিবাদ ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। গত শুক্রবার বাদ জুমা এসব সমবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সংগঠনের ঢাকা মহানগরের আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশে মহানগরের সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেছেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, যদি কেউ ইসলাম এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোনো চক্রান্ত করে, সেই ষড়যন্ত্রের আমরা মূলোৎপাটন করব। আমরা বিশ্বাস করি, এই দেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মডেল হয়ে থাকবে।
জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, হিন্দু ভাইদের বলতে চাই, আমাদের দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের মতো সংগঠনগুলো কাজ করছে। কিন্তু আমরা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এবং মাদরাসার ছাত্ররা, সর্বদা আপনাদের পাশে থেকেছি। এমনকি আপনাদের মন্দির রক্ষার জন্য পাহারা দিয়েছি। সম্প্রতি দুর্গাপূজা উদযাপন হয়েছে। আমরা বাংলাদেশে নির্বিঘ্নে, শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে দুর্গাপূজা পালন করতে পারেন-তা নিশ্চিত করেছি। অথচ প্রতিবেশী দেশ ভারতে অনেক জায়গায় হিন্দুরা পূজা উদযাপন করতে পারেননি। আমরা আপনাদের নাগরিক ভাই হিসেবে মনে করি এবং বাংলাদেশে আপনাদের অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আপনাদের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতির মতো উচ্চপদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাতে আমরা কোনো আপত্তি করিনি।
ঢাকা মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হক বলেন, আজকে সুপরিকল্পিত একটি সাম্প্রদায়িক উসকানির মাধ্যমে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে। শহিদ সাইফুল ইসলাম আলিফের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা শুধু বর্বর নয়, বরং একটি ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ড। চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে আদালত চত্বরে সন্ত্রাসী সংগঠনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সরকারি একজন তরুণ আইনজীবী কর্মকর্তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে হত্যা করবে এ রকম বর্বরতার দৃশ্য দেখার জন্য বাংলাদেশ মোটেও প্রস্তুত নয়।
মামুনুল হক বলেন, আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, মানুষের এই ক্ষোভ, মানুষের হৃদয়ের এই রক্তক্ষরণকে আপনারা বোঝার চেষ্টা করুন। যেসব হত্যাকারীকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদেরই শুধু বিচারের আওতায় আনলে চলবে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের স্পষ্ট দাবি হলো-এ ঘটনার নেপথ্যে যারা রয়েছে, সেই নেপথ্যের খুনিদের বের করে তাদের মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচন করতে হবে। তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। শহিদ আলিফের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ইসকনের স্পষ্ট মদদদাতা খুনি হাসিনাকে আসামি করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী বলেন, ইসকন কোনো হিন্দু সংগঠন নয়, তারা একটি জঙ্গি সংগঠন। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে পতিত সরকারের হয়ে কাজ করছে। এ ছাড়া ভারত এই দেশকে বিপথগামী করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সেটা কখনোই সফল হতে দেওয়া যাবে না।
এ সময় মাওলানা আতাউল্লাহ আমিনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন-মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদ, মুফতি জাবের কাসেমী, মাওলানা লোকমন মাজহারী, মাওলানা আজহারুল ইসলাম, মুফতি কামাল উদ্দীন, মাওলানা ফয়সাল আহমাদ, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা রাশেদ বিন নূর, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, মাওলানা ফখরুল ইসলাম, মাওলানা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান, মাওলানা মামুনুর রশীদ প্রমুখ।
রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছে হেফাজতে ইসলাম। আমাদের ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। জুমার নামাজের পর সংগঠনের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার আয়োজনে মিছিল নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ মাঠ থেকে বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে ভারতীয় দূতাবাস কার্যালয় অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সোমবার এ কর্মসূচি পালন করা হবে সমাবেশে জানানো হয়।
নগরীর দুই নম্বর গেটে এক প্রতিবাদ সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি হারুন ইজাহার বলেন, ২ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় চট্টগ্রামে অবস্থিত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার অফিস অভিমুখে আমাদের লংমার্চ হবে।
তিনি বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, ছাত্র সমন্বয়ক ও সরকারকে জানিয়ে দেব যে, আমরা ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে শান্তিপূর্ণ যাত্রা করব। শান্তিপূর্ণ দূরত্বে থেকে আমাদের প্রতিনিধিরা তৌহিদী জনতার পক্ষ থেকে দূতাবাসে গিয়ে স্মারকলিপি দেবেন।
মুফতি হারুন ইজাহার আরও বলেন, কোনো হিন্দু সংগঠন আমাদের সঙ্গে বসতে চাইলে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রথম শর্ত ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। প্রথম আলোসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় হিন্দুদের ওপর আক্রমণের যে খবর প্রচার করেছে, সে কথা মিথ্যা ও ভুয়া। এটা হিন্দু নেতাদের বলতে হবে। আমার তিন নম্বর শর্ত হলো আপনাদের বিভিন্ন সংগঠনে ঘাপটি মারা বিভিন্ন জঙ্গি, সন্ত্রাসী ও গুন্ডা রয়েছে। সবাইকে বহিষ্কার করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করতে হবে। এ তিনটি শর্ত পূরণ না হওয়া ছাড়া আমরা আপনাদের সঙ্গে ডায়লগে বসব না। কোনো ইসলামিক দল যদি ডায়লগে বসেন তারা মোনাফিক হিসেবে চিহ্নিত হবে। মিছিলটি নগরীর ওয়াসা, জিইসি হয়ে দুই নম্বর গেট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
খুলনা : জেলায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা ইমাম পরিষদ। শুক্রবার নগরীর ডাকবাংলা মোড়ে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বায়তুন নূর মসজিদের অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। এ সময় বক্তারা দেশবিরোধী চক্রান্ত ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপতৎপরতার কারণে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি তোলেন।
বক্তারা বলেন, দেশের পরাজিত শক্তি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উসকে দিয়ে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এতে ভারতে বসে মদদ জোগাচ্ছে এদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। ইসকনের অপতৎপরতা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টারই অংশ। চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার বিষয়টি দেশে গৃহযুদ্ধ বাধানোর অপপ্রয়াস।
খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের সহ-সভাপতি মাওলানা আবদুল্লাহ বলেন, মুসলমানরা কখনো উসকানিমূলক কথাবার্তা বলে না। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, আপনাদের মন্দির আমাদের ছেলেরা পাহারা দেয়, এটাই বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র এমনই।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, ইসকন একটি উগ্রবাদী সংগঠন। স্বৈরাচার সরকার পতন হওয়ার কারণে এই ইসকন তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে।
জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ সালেহর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এএফএম নাজমুস সউদ, মাওলানা নাসির উদ্দিন কাসেমী, মাওলানা আনম আবদুল কুদ্দুস, অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মাওলানা মুশতাক আহমেদ, মাওলানা আবদুল্লাহ হুসাইন, মাওলানা আসাদুজ্জামান, মাওলানা জাহিদুল হকসহ আরও অনেক।
কুড়িগ্রাম : জেলার চিলমারীতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন আলেম-ওলামা ও ছাত্র-জনতাসহ মসজিদের মুসল্লিরা।
আসরের নামাজের পর থানাহাট ইউনিয়নের থানাহাট বাজার জামে মসজিদের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদ সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন মুফতি আবদুল ওয়াজেদ, ম আবদুস সালাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি সাফিন সাজ্জাদ, আবদুর রহমান পারভেজ, সাব্বির আহম্মেদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মেইড ইন ইন্ডিয়া লেখা কোনো পুতুল আর বাংলাদেশে নাচবে না নাচাতে দেওয়া হবে না। খুনি হাসিনাই ছিল ভারতের নাচানো শেষ পুতুল। জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতা খুনি ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছে। তারা আরও বলেন, সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে। চিন্ময়কে ফাঁসিতে ঝোলাতে হবে।
দিনাজপুর : জুমার নামাজ শেষে জেলা ইমাম সমিতি, ওলামা মাসাহেক ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে দিনাজপুর ইনস্টিটিউট হতে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা দ্রুত ইসকন নিষিদ্ধসহ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় দোষীদের ফাঁসির দাবি জানান।
নাটোর : দুপুরে লালপুর শ্রী সুন্দরী হাই স্কুল থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন লালপুর বাজার মসজিদের ইমাম জিয়াউর রহমান, ডেবরপাড়া মসজিদের ইমাম আবু হানিফ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল বাকী, সাদ্দাম হোসেন, মিজানুর রহমান প্রমুখ। এ সময় বক্তারা বলেন, ইসকন নিষিদ্ধ করা না হলে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টি হবে।
হবিগঞ্জ : জুমার নামাজের পর শহরের কোর্ট মসজিদ প্রাঙ্গণে আহলে সুন্নত আল জামাতের উদ্যোগে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এ সময় শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে দলে দলে সুন্নি জনতা মিছিল নিয়ে আসেন। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন আহলে সুন্নত আল জামাতের জেলা সভাপতি মো. রইছ মিয়া, সদর উপজেলা সভাপতি আবদুল আউয়াল, কোর্ট মসজিদের খতিব মাওলানা গোলাম মোস্তফা নবীনগরী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকারীদের আটক করে দুষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে ইসকনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। বক্তারা হুঁশিয়ারি করে আরও বলেন, ইসকন যদি আর কখনো এদেশে কোনো ধরনের অপতৎপরতা চালায় তাহলে তাদের বাংলার মাটিতে ঠাঁই দেওয়া হবে না।
মুন্সীগঞ্জ : বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস গজারিয়া শাখার নেতাকর্মীরা জুমার নামাজের পর ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জমায়েত হতে থাকে। পরে সেখানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, ‘ইসকন একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। সন্ত্রাসী এ সংগঠনটির লক্ষ্যই হলো দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা। বিগত বছরগুলোতে তারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। এখন তারা হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। আমরা অবিলম্বে এ সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানাই।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস গজারিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মো. বেলাল হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আতাউল্লাহ মহসিন, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা দ্বীন ইসলাম, মাওলানা আবদুল ওহিজ প্রমুখ।
নরসিংদী : জেলা সদরের হাঁড়িধোয়া নদীর ওপর গড়ে তোলা ইসকনের আস্তানা ২৪ ঘণ্টার মধ্য গুটিয়ে নেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছেন মুসল্লিরা। ইসকন নিষিদ্ধের দাবি ও আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বিভিন্ন মসজিদের মুসল্লিরা এ আল্টিমেটাম দেন।
শুক্রবার জুমার নামাজ পরে বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা থেকে মুসল্লি ও ছাত্র, জনতা নরসিংদী পৌরসভা মোড়ে এসে সমবেত হয়ে বিভিন্ন স্লোগানে হাজারা জনতা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্টেশন রোডে এসে জড়ো হয়। সেখানে চট্টগ্রামের অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার বিচার দাবি করেন তারা।
এ সময় নরসিংদী জেলা কওমি মাদরাসা পরিষদের সভাপতি হজরত মাওলানা হাফেজ শওকত হোসেন সরকার, নরসিংদী জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি হজরত মাওলানা মুফতি আলী আহমেদ হোসেনসহ জেলার ইমাম, ওলামা, মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন।
পিরোজপুর : জুমার নামাজের পর পিরোজপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে সাধারণ মুসল্লিদের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পিরোজপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহর ইমাম মাওলানা হাফিজুর রহমান খান, বায়তুল মোক্কারাম মসজিদের ইমাম মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ, বায়তুল সালাম জামে মসজিদের ইমাম মুফতি আহসান উল্লাহ, পিরোজপুর কেন্দীয় মসজিদের ইমাম মুফতি জুবায়ের, বায়তুল আমান জামে মসজিদ ইমাম মুফতি হাফিজুর রহমান।
বক্তারা বলেন, দেশের পরাজিত শক্তি হিন্দুদের একটি অংশকে ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আর এতে ভারতে বসে মদদ জোগাচ্ছে এদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। এরই অংশ হিসেবেই দেশকে অস্থিতিশীল করার অপতৎপরতা চালাচ্ছে ইসকন।
রাজশাহী : নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট বড় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে ‘ওলামা ও তওহিদী জনতা’র ব্যানারে জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিল থেকে ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ইসকনের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘এক দুই তিন চার, ইসকন তুই বাংলা ছাড়’, ‘ইসকনের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’সহ নানা ধরনের স্লোগান দেন মুসল্লিরা।
মিছিলটি নগরীর আলুপট্টি হয়ে সোনাদীঘি মোড় প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইসকন আসলে একটি উগ্রপন্থি সংগঠন। এ ধরনের সংগঠনের কার্যক্রম বাংলাদেশে চলতে পারে না। তাই অবিলম্বে বাংলাদেশে ইসকনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
কুমিল্লা : হোমনায় শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে উপজেলা পরিষদ মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয় হোমনা উপজেলা সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে উপজেলা সমন্বয়ক মো. সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন বিক্ষোভকারীরা।‘ইসকন তুই জঙ্গি-ভারতের সঙ্গী’, ‘দিল্লি না ঢাকা-ঢাকা ঢাকা’ … ইত্যাদি স্লোগানে স্লোগানে উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। পরে তারা সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এতে বক্তব্য রাখেন হোমনা উপজেলার সমন্বয়ক মো. সাজ্জাদ, ইউসুফ, মাওলানা সালেক, সাইদুল ও মো. সাইফুল প্রমুখ।